মানববন্ধনে ‘যুক্তরাষ্ট্রে আজ মানবাধিকার ভূলুণ্ঠিত’, ‘জাস্টিস ফর ফয়সাল’, ‘ইউএসএতে বাংলাদেশি নিহত, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় চুপ কেন?’, ‘স্টপ কন্টিনিউয়াস হিউম্যান রাইটস ভায়োলেশন’ প্রভৃতি স্লোগান লেখা প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়ান অংশগ্রহণকারীরা।
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের ঢাকা দূতাবাস সাঈদ ফয়সাল হত্যাকাণ্ডের স্বচ্ছ তদন্তের আশ্বাস দিয়েছে। আজ বিকেলে দূতাবাসের মুখপাত্র জেফ রাইডেনুরের পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস সাঈদ ফয়সালের পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জ্ঞাপন করছে। এ ঘটনায় ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির অফিসের মাধ্যমে স্বচ্ছ ও পূর্ণাঙ্গ তদন্তে আমাদের সমর্থন রয়েছে।’
গত বুধবার বোস্টনের কেমব্রিজে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ইউনিভার্সিটি অব ম্যাসাচুসেটস আমহার্স্টের শিক্ষার্থী সাঈদ ফয়সাল। তাঁর গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার দাঁতমারা এলাকায়। যুক্তরাষ্ট্রেই ফয়সালের জন্ম হয়েছে। তাঁকে হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও দোষী পুলিশ কর্মকর্তার দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেছে পরিবার। যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফয়সালের চাচা সেলিম জাহাঙ্গীর প্রথম আলোকে বলেছেন, এ ঘটনায় স্থানীয় বাঙালি কমিউনিটির মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।
এই হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার দাবিতে দুপুরে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে মানববন্ধনে অজয় দাস গুপ্ত বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রে অনেক মানবাধিকার লঙ্ঘন ও জাতিগত সহিংসতার ঘটনা ঘটলেও তারা মানবাধিকার বিষয়ে বাংলাদেশসহ অন্যান্য দেশকে পরামর্শ দিচ্ছে। আমরা চাই না আমাদের দেশে মানবাধিকার লঙ্ঘন হোক। তবে যদি হয়ে থাকে, তাহলে আমরাই ব্যবস্থা নেব, অন্যের পরামর্শে নয়। মার্কিন পুলিশ এমন একজন বাংলাদেশিকে গুলি করে হত্যা করেছে, যিনি কোনো অপরাধে দোষী সাব্যস্ত হননি।’
মানববন্ধনে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ব্যারিস্টার প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়া ছাড়াও ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সদস্য ও ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরশনের ২০ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর ফরিদউদ্দিন রতন, ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরশনের ২৪ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর হাসিবুর রহমানসহ আরও কয়েকজন বক্তব্য দেন।
সাংবাদিকেরা মানববন্ধনের বিষয়টি পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেনের নজরে আনলে তিনি বলেন, ‘আমি তো জানি না। এ ধরনের মানববন্ধনকে আমরা উৎসাহ বা সমর্থন করি না।’ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে বিচারব্যবস্থা ভালো। বাংলাদেশি মৃত্যুর বিষয়ে তারা তদন্ত করবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলম বলেন, ‘কাজের চাপের কারণে আমি মানববন্ধনটা বিস্তারিতভাবে দেখতে পারিনি। মানববন্ধন কারা করেছেন, পুরো বিষয়টা আমি জানি না। যাঁরা করেছেন, তাঁরা এটা আমাদের চিঠি দিয়ে জানাতে পারতেন।’ তিনি বলেন, ওয়াশিংটন ডিসিতে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ইতিমধ্যে সে দেশের সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কাছে বিষয়টি উত্থাপন করেছেন। যুক্তরাষ্ট্র সরকারের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে, এ ঘটনায় ন্যায়বিচার হবে। এ ছাড়া পুলিশ কর্মকর্তাকেও সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে বলে তাঁরা জানতে পেরেছেন।